আইটি, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তথা ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স গ্রেজুয়েট যারা গভারমেন্ট,স্বায়ত্তশাসিত,পাবলিক লিমিটেড তথা প্রতিষ্ঠিত সফটওয়ার ফার্মে যারা চাকুরি খুজছেন তাদের জন্য আমরা যারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভিন্ন ভিন্ন পোস্টে কমরত তাদের কিছু দায়িত্ব থেকেই যায়, আমাদের জুনিয়রদের গাইড করার ব্যাপারে। আমরা মনে প্রানে বিশ্বাস করি যে, আমাদের জুনিয়রা আমাদের চাইতে অনেক অনেকগুন পারদর্শী তারপরও যদি এই গাইডলাইন গুলো হয়ত আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দিবে।

স্বাধীনতার ঘোষক ও অসহযোগ আন্দোলন

 বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক কে? কবে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল?

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম বললে কৈবর্ত বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের পূর্ব পর্যন্ত সময়কালের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে সংগ্রাম হয়েছিল সেগুলো কে স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয়। এবার আসি স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে- শাব্দিক ভাবে যদি স্বাধীনতার ঘোষণা বলেন তাহলে বলব- ৭ মার্চ এর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বক্তব্যে তা ফুটে উঠেছে..."এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম" জয় বাংলা।

মুক্তিযুদ্ধ হল সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ। শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে একটি স্বাধীনতার ঘোষণা সম্বলিত লিখিত বার্তা দিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় এবং ৩০ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জেড ফোর্সের অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। 


স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয় কবে ? কিভাবে?

একটি জাতি ও দেশের জন্ম , পরিচয় খুব তাৎপর্য বহন করে । একটি জাতির অবশ্যই তার দেশের সঠিক জন্ম পরিচয় জানতে হবে । আমি অনেক মানুষের কাছে জানতে চেয়েছি যে আসলে বাংলাদেশের জন্ম কত তারিখ। সবাই এমন কিছু উত্তর দিয়েছে যা শুনে আমি বিস্মিত , হতবাক । কেউ বলল যে বাংলাদেশের জন্ম এপ্রিলের ১০ তারিখ , আবার কেউ বলে ডিসেম্বর ১৬ তারিখ। আমি সত্যি টা প্রমান করতে চেষ্টা করব ।

আসলে আমি এই ইতিহাসের ব্যাখ্যা টা জানতে পারলাম আমার শ্রদ্ধেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডঃ একরামুল হক স্যার এর সংবিধান ক্লাস থেকে।তিনি সংবিধান পড়ানোর আগেই আমাদের জিজ্ঞাস করেছিলেন যে বাংলাদেশের জন্ম কবে ? অনেকেই ভুল উত্তর দিয়েছেন। আর যারা সঠিক উত্তর দিয়েছিলেন তাঁরা তাদের উত্তরের পক্ষে ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি।

তাহলে চলুন দেখে নেই বাংলাদেশের জন্ম কবে এবং কেনঃ

প্রথমত, জাতির জনক শেখ মুজিব ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এবং তিনি শুরু করেন যে ,ইহাই হয়ত আমার শেষ বার্তা , আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সুচনা করেন । উল্লেখ্য যে স্বাধীনতার ঘোষক একজন এবং সেটা বঙ্গবন্ধু । এটা মহামান্য উচ্চ আদালত ও গবেষক দ্বারা প্রমানিত।

দ্বিতীয়ত, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণায় বলা হয় যে , এটি কার্যকর হবে গত মার্চের ২৬ তারিখ থেকে ।আইনের পরিভাষায় একে বলা হয় Retrospective Effect. তার ,মানে ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয় ।

তৃতীয়ত , একটি রাষ্ট্রের সব উপাদান ২৬ শে মার্চ থেকে ছিল । যেমন সরকার , জনগন , ভূখণ্ড । কিন্তু সার্বভৌমতা ছিল না । আর আমরা এটার জন্যই যুদ্ধ করেছি।

সর্বশেষ , দেশের সুপ্রিম আইন হলো সংবিধান । এটি একটি রাষ্ট্র ও জাতির অস্তিত্ব বহন করে। সেই সংবিধানের প্রস্তাবনার শুরুতেই বলা আছে যে আমরা একটি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ২৬ শে মার্চ গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছি । বাংলাদেশের জন্ম যে মার্চের ২৬ তারিখ এটা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই ।এটা দিনের আলোর মত সত্য ।

কিন্তু আমরা যে ফেসবুকে ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ স্ট্যাটাস দেই হ্যাপি বার্থ ডে বাংলাদেশ !! এর মানে কি ??? এর মাধ্যমে আমরা ২ টা অন্যায় করি । এক, ইতিহাস জানি না, দুই, দেশের মহান এই ইতিহাস কে অপমান করি । ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের  মহান বিজয় দিবস।আর  এ দিন আমরা প্রমান করেছি যে আমাদের ২৬ মার্চ যে জন্ম হয়েছে তা বৈধ । আমাদের কথা টা যে সত্য এটা ১৬ ডিসেম্বর তাদের পরাজিত করে বিশ্ব কে জানিয়ে দিয়েছি । আজ থেকে আমি আশা করব যে ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের জন্ম তা সবাই কে জানাবেন এবং জানবেন ।

 

দেলোয়ার এর মন্তব্য- বাংলাদেশ নামের দেশের জন্ম হয় ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ, কিন্তু বাংলাদেশ পূর্ণ স্বাধীন দেশের মর্যাদা পায় ১৯৭১ শালের ১৬ ই ডিসেম্বর।

অসহযোগ আন্দোলন কবে শুরু হয় এবং কবে শেষ হয়

অসহযোগ আন্দোলন [Non Co-operation Movement]:- ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা সেপ্টেম্বর নাগপুরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের একটি বিশেষ অধিবেশনে গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন । ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলন প্রথম একটি বৃহত্তম গণআন্দোলন ছিল । সম্পূর্ণ অহিংস পদ্ধতিতে সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করে ভারতের ব্রিটিশ শাসনকে ব্যর্থ করে দেওয়াই ছিল গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য । দীর্ঘ ৩৫ বছর পর কংগ্রেস তার চিরাচরিত আবেদন-নিবেদন নীতি তথা 'রাজনৈতিক ভিক্ষাবৃত্তি' পরিত্যাগ করে প্রত্যক্ষ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের দিকে অবতীর্ণ হয়েছিল । গান্ধিজি কয়েকটি বিশেষ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য তাঁর অহিংস অসহযোগ আন্দোলন শুরু করার প্রস্তাব সকলের সামনে ব্যক্ত করেন । এই উদ্দেশ্যগুলি হল

(১) খিলাফৎ সমস্যার যথাযত সমাধানের দাবি জানানো

(২) ব্রিটিশ সরকারের দমনমূলক আইনগুলি, বিশেষভাবে কুখ্যাত রাওলাট আইনের বিরোধিতা করা ।

(৩) জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানানো ও পাঞ্জাবে নিষ্ঠুর পুলিশি তাণ্ডবের জন্য দায়ী জেনারেল ডায়ার সমেত সমস্ত অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি বিধান করা ।

(৪) ভারতবাসীর প্রতি ব্রিটিশের সমস্ত অন্যায় অবিচারের চিরস্থায়ী প্রতিকার বিধান করা ।

(৫) এক বছরের মধ্যে স্বরাজ অর্জন করা ।

(৬) অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ, মাদক বর্জন এবং সমগ্র জাতিকে শৃঙ্খলাপরায়ণ ও যাবতীয় ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত করে তোলাও অসহযোগ আন্দোলনের লক্ষ্য রূপে গৃহীত হয়েছিল ।

এই সকল উদ্দেশ্য পূরণের জন্য গান্ধিজি তাঁর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন । কর্মসূচির নেতিবাচক দিকগুলি হল

(১) আইনসভা ও সরকারি অফিস আদালত বর্জন করা,

(২) সরকারি উপাধি, পদক, খেতাব, সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান ইত্যাদি বর্জন করা,

(৩) সরকারি স্কুলকলেজ থেকে ছেলেমেয়েদের নাম প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়া,

(৪) সমস্ত বিদেশি পণ্যদ্রব্য বর্জন করা,

(৫) সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্যপদ বর্জন করা,

(৬) সকল শ্রেণির সামরিক ও বেসামরিক সরকারি কর্মচারীর বিদেশ গমনে অস্বীকৃতি ইত্যাদি ।

আন্দোলনের  ইতিবাচক দিকগুলি হল

(১) চরকায় সুতো কাটা এবং খাদি বস্ত্র উত্পাদন ও ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন করা,

(২) জাতীয় স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা ,

(৩) নিরক্ষরতা ও অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা,

(৪) দেশীয় শিল্পজাত পণ্য গ্রহণ করা,

(৫) দেশের গণ্যমান্য মানুষদের নিয়ে সালিশি বোর্ড গঠন করা ইত্যাদি ।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দের নাগপুর অধিবেশনে কংগ্রেস এই কর্মসূচি গ্রহণ করে গান্ধিজিকে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন পরিচালনার সর্বময় দায়িত্ব অর্পণ করেন । জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছিলেন । অসংখ্য ছাত্র স্কুল, কলেজ বর্জন করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল । দেশবাসীর উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদের বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা হিসাবে কাশী বিদ্যাপীঠ, বারাণসী বিদ্যাপীঠ, গুজরাট বিদ্যাপীঠ, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় । ডক্টর জাকির হোসেন, আচার্য নরেন্দ্র দেব, লালা লাজপত রায় প্রমুখ শিক্ষাবিদগণ এই সব নব প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন । মতিলাল নেহরু, ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস প্রমুখ আইনজীবীগণ আইন ব্যবসা ত্যাগ করে অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন । সুভাষচন্দ্র বসু সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করে এবং জওহরলাল নেহরু এলাহাবাদ হাইকোর্ট ছেড়ে অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন । মহাত্মা গান্ধির ডাকে ডঃপ্রফুল্ল ঘোষ সরকারি উচ্চপদে ইস্তফা দিয়ে, প্রফুল্ল সেন, অজয়্ কুমার মুখার্জি উচ্চশিক্ষার মোহ বর্জন করে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন । এভাবে একে একে মেদিনীপুরের যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়, নদিয়ার হেমন্ত সরকার, বরিশালের যতীন সেন, ময়মনসিং -এর ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী প্রমুখ আরও অনেকে তাঁদের সঙ্গীসাথীদের নিয়ে এগিয়ে এলেন । অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠল জাতীয় মুক্তিবাহিনী । শুধু ছাত্র ও বুদ্ধিজীবী মহল নয়, দেশের শ্রমিক শ্রেণি কলকারখানা ছেড়ে এবং কৃষক শ্রেণি ও গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষও এই অসহযোগ আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন । সীমান্ত প্রদেশের পাঠান, মেদিনীপুরের কৃষক, মহারাষ্ট্রের শ্রমিক, উত্তরপ্রদেশের ক্ষেতমজুর, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকলে এই আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেছিলেন । ঘরে ঘরে ত্যাগের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল । সমস্ত দেশ জুড়ে গান্ধিজি যে অহিংস বাহিনী গড়ে তুললেন তারা পোশাকে স্বতন্ত্র, আচরণে বিনম্র, প্রতিজ্ঞায় অটল, এবং ব্যক্তিত্বে অনন্য । তাদের পরণে খদ্দরের ধুতি, মাথায় টুপি, প্রত্যেকেই যেন আত্মত্যাগ ও শুভ্রতার প্রতীক । অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বিপুল আগ্রহ লক্ষ্য করে জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন, "আমরা দেখলাম যে সমস্ত গ্রামাঞ্চল উদ্দীপনার এক আশ্চর্য উন্মাদনায় ভরপুর ।" আমেদাবাদে গৃহীত এক সিদ্ধান্ত অনুসারে গান্ধিজি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি সুরাট জেলার বরদৌলিতে গণ আইন অমান্য  আন্দোলনের এক কর্মসূচি ঘোষণা করেন । এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিপুল উত্সাহ ও উদ্দীপনার সঞ্চার হয় । কিন্তু এই  আন্দোলন শুরুর আগেই ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৫ই ফেরুয়ারি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরায় একদল হিংসাত্মক জনতা এক পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে ২২ জন পুলিশ কর্মচারীকে পুড়িয়ে মারে । গান্ধিজির কানে এই সংবাদ পৌঁছুলে তিনি তত্ক্ষণাৎ আন্দোলন বন্ধের আদেশ দেন । সারাদেশ তাঁর এই আদেশে স্থম্ভিত হয় । মতিলাল নেহরু, জওহরলাল নেহরু সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধিজির এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখর হন । কেউ একে 'জাতীয় বিপর্যয়' কেউ 'পর্বত প্রমাণ ভুল' বলে মন্তব্য করেন । তথাপি কংগ্রেস কার্য নির্বাহক সমিতি গান্ধিজির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন ।

অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব:-  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অসহযোগ আন্দোলন গভীর প্রভাব ফেলেছিল ।

(১) এই আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতবাসীর মধ্যে গান্ধিজির অবিসম্বাদিত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় ।

(২) কংগ্রেস একটি সর্বভারতীয় দলরূপে প্রতিষ্ঠা পায় ।

(৩) সকল শ্রেণির মানুষের যোগদানে আন্দোলন একটি গণআন্দোলনে পরিণত হয় ও জনগণের মধ্যে প্রতিবাদের মানসিকতা জন্ম নেয় ।

(৪) আন্দোলনের ফলে একদিকে যেমন দারিদ্র, অস্পৃশ্যতা, মাদক সেবনের বিরুদ্ধে জনগণ সচেতন হয়, অন্যদিকে খাদি ও কুটির শিল্পের বিকাশের ফলে দেশ ও জাতি অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করে ।

(৫) প্রচলিত ব্রিটিশ শাসনের প্রতি গ্রাম, গঞ্জ ও শহরের মানুষের মধ্যে ঘৃণার সঞ্চার হয়েছিল ।

(৬) ভারতীয়দের রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি করতে অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম ।

সাংবিধানিক ভাষ্যকার কুপল্যান্ড -এর মতে বালগঙ্গাধর তিলক যা করতে পারেনি গান্ধিজি তা করতে পেরেছেন । গান্ধিজি জাতীয় কংগ্রেসকে বিপ্লবমুখী করে তুলতে সমর্থ হয়েছিলেন ।

অসহযোগ আন্দোলনের সাফল্য ও আন্দোলন প্রত্যাহার

অসহযোগ আন্দোলনের সাফল্য ও লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফুর্ত যোগদান ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে সন্ত্রস্ত করে তোলে। কিন্তু ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ তারিখে চৌরি চৌরায় প্রতিবাদী জনতা ও স্থানীয় পুলিশের হিংসাত্মক সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হন। গান্ধীজি অণুভব করেন আন্দোলন বিপথে চালিত হচ্ছে। তিনি চাইতেন না আন্দোলনে জনতা ও পুলিশ মারমুখী হয়ে পরস্পর পরস্পরকে আক্রমণ করুক ও সাধারণ নাগরিকগণ তাতে নিহত হন।

গান্ধীজি তিনদিন অনশন পালন করেন। ভারতীয় জনগণকে সংগ্রাম বন্ধ করার অণুরোধ জানান ও গণ-অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ